স্বামী ত্যাগের কারণ টয়লেট!
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
ভারতীয়রা নিজেদের আধুনিক সভ্যতার মানুষ দাবি করলেও এখনও এমন কিছু তারা করে যাচ্ছে তাতে তাদেরকে মোটেও আধুনিক বলা যায় না। ভারতের বিহার রাজ্যের ভাইশালীর পাহাড়পুরে এমনই এক ঘটনার জন্য নিজ স্বামীকে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন সুনিতা দেবী নামে এক নারী।
বাড়িতে টয়লেট না থাকায় চার বছরের বৈবাহিক সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছেন সুনিতা দেবী। ২৫ বছর বয়সী সুনিতার প্রশ্ন, এ ছাড়া তার কী করার ছিল। উন্মুক্ত ময়দানে প্রাকৃতিক কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের কথা শোনা ও অপমানের চেয়ে স্বামীকে ত্যাগ করাই তার কাছে শ্রেয় মনে হয়েছে।
২০১১ সালে বিশেনপুর পঞ্চায়েতে সবজি ব্যবসায়ী ধীরাজ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সুনিতা। সন্তানহীন এই দম্পতি দুই রুমের একটি বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। যে ঘরের অর্ধেক পাকা, অর্ধেক কাঁচা। সঙ্গে থাকত ধীরাজের বাবা-মা।
কিন্তু একটি পায়খানার কারণে তাদের চার বছরের বৈবাহিক সম্পর্কে ছেদ পড়ল। ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিক কাজের জন্য পায়খানার খুবই সঙ্কট চলছে। এর ফলে নারীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাতে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হয়। কিন্তু তাতেও মুক্তি নেই। বাড়ির বাইরে গিয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে গিয়ে দেশটির অনেক নারী অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এমনকি অনেকেই গণধর্ষণের কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।
অবস্থা যখন এই, তখন সুনিতা দেবীর সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু ধীরাজের সহজ স্বীকারোক্তি-একটি টয়লেট না থাকাই তাদের সম্পর্ক ভঙ্গের কারণ। তিনি বলেন, ‘সুনিতা আমাকে প্রায়ই টয়লেট বানানোর কথা বলেছে। কিন্তু আমার কাছে তা বানানোর মতো টাকা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আমার বাবা মারা গেছেন। তাই পুরো সংসার চলত আমার সামান্য আয়ের ওপর।’
সর্বশেষ এক জরিপে দেখা গেছে, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৯২ শতাংশ বাড়িতে পায়খানা নেই। এ ছাড়া বিহারে ৮২ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশে ৭৮ শতাংশ এবং ওডিশা, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে ৮৫ শতাংশের বেশি বাড়িতে টয়লেট নেই।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে